টুইটার বিক্রি হয়ে গেল। ফ্রি স্পিচ আজ ডেঞ্জার জোনে পড়েছে। ডিজিটাল টাউন স্কোয়ার এখন প্রাইভেট প্রোপার্টি। এমন হাজারো কথা বার্তা ইদানীং আমাদের কানে খুব বাজছে। যার কারণ টুইটার কিনেছে ইলোন মাক্স। প্রথমে বলে রাখি, এই টুইটার অন্যান্য সাধারণ মিডিয়ার মতই। এটা টাউন্ স্কোয়ার না। কখনো হতেও পারে নি। যে যতই বলুক, সময়ে সময়ে আমরা দেখেছি কীভাবে টুইটারে মানুষ হেট স্পিচ, ফেক নিউজ, প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর কাজ করেছে। তবে হ্যা স্ন্যাপচ্যাটের থেকেও ছোট এই প্লার্টফর্ম কোনো টপিক স্প্রেড করতে, ট্রেন্ডিং এ আনতে পারে ইন নো টাইম। তাই কি এটার জন্য গুনতে হলো ৪৪ বিলিয়ন ডলার? আচ্ছা এখানে প্রথম কথা হচ্ছে টুইটার মাস্ক কিনে নি, ওকে দিয়ে জোর করে কিনিয়েছে। ডেলাওয়ের কোর্ট অফ চান্সেরির কারণেই মূলত মাক্সকে টুইটার কিনতে হয়েছে, ও নিজের বলা ৪৪ বিলিয়ন ডলারে। প্রথমে মাক্স বললো কিনবে, তার পর নিজেই আবার বললো ভাই আমি টুইটার কিনব না টুইটারে তো অর্ধেক বটই আছে। এইটাই সমস্যা আমি কিনব না।কিন্তু টুইটারে বড় ভাইরা এত সহজে এত টাকা ছেড়ে দিবে? এত বড় পার্টি ওরা পাবে আর? ওরা কি করলো একটা মামলা দিল যে এখন তোমার কিনতেই হবে ভাই। এভাবে তো নিজের কথা থেকে নিজে বের হয়ে যেতে পারবা না। তুমি তো আর পলিটিশিয়ান না। তো কোর্টে যখন মামলা গেল, মাক্সকের প্রাইভেট ইনফর্মেশন, মাক্সকের এস এম এস সব ধীরে ধীরে সামনে আসতে শুরু করলো। ফলে তার যেই পাবলিক ইমেজ আছে, জনতার সামনে, যে মাক্স ভাই জিন্দাবাদ, মাক্স ভাই নিয়ে যাবে মার্সে, মানব জাতির রক্ষক; সেই ইমেজ হার্ট হবে।আরো যত বেশিদিন মামলা চলবে ততই এব্রেসিং তথ্য জনতার সামনে আসবে। তাই এত পাওয়ার থাকার পরেও,মাক্স মামলা হেরে যায় আর মাক্সকে টুইটার কিনতে হয়। এটাই আমাদের দেখায় যে আপনি ধনী হতে পারেন কিন্তু ভাই ল’ এর আগে তো যেতে পারবেন না।
এখন আপনারা নিশ্চই বুঝতে পারছেন টুইটারে ইদানিং যেসব হচ্ছে, সেগুলো কিসের জন্য হচ্ছে। ৭৫০০ ওয়ার্কারের প্রায় অর্ধেক ওলরেডি ছাটাই করে দিয়েছে, যাতে টাকা বাচানো যায়৷ আর এত বাজে ভাবে ওদেরকে বহিষ্কার করছে যে, সব চাকরী হারানো জনতা মাক্সকের বিরুদ্ধে মামলা করে দিছে। ভাই এইটা নিয়ে কথা বলতে আরো একটা পোস্ট লাগবে। শুধু এই টুকু জেনে রাখুন যে, ওয়ার্কাররা রাতে ঘুমায় আর সকালে উঠে দেখে চাকরী নেই৷ মানে যেই প্ররিষ্ঠানে তারা এত বছর চাকরী করলো, মাক্স এসে তাদের কোনো ইজ্জতই দিল না। আরে ভাই ফ্রি স্পিচ তো বাচাতে হবে। এভাবে কয়েকজনের চাকরী খেলে সমস্যা কি? আর হ্যা, যদিও ইলোন মাক্স আগেই বলেছে যে ৭৫% এর চাকরী নট হবে। কিন্তু এভাবে? এত ডেসপারেশন, ক্রোধ? তার উপর এখন টুইটার ব্লু টিকের জন্য ৮ ডলার চার্জ করবে। বাহ। এসবের জন্য মাক্সের যে ধরনের সমালোচনা হচ্ছে তা ৪৪ বিলিয়নের সমনই বলা যায়৷তবে এইটুকু ক্লিয়ার যে মাক্সের এখন প্রয়োজন টাকার। হ্যা ভাই পৃথিবীর সব থেকে ধনী ব্যাক্তিও টাকার জন্য ডেসপারেট। কোম্পানী চালাতে হবে না? তো টাকা লাগবে আর টাকা বাচাতে হবে। কিছু কিছু নিউজ থেকে তো জানা গিয়েছে যে টুইটারে আরো নতুন এডভার্টাইজমেন্ট স্কিম আসতে চলেছে, যার মধ্যে এডাল্ট কন্টেন্টও থাকবে। ভাই শুনেন যখন মাথার উপর ঋণের বোঝা, লসের বোঝা থাকে, তখন মানুষের ডেসপারেট হওয়াটাই স্বাভাবিক। বছরের লাস্ট কোয়াটারে টুইটারের লস ছিল ৩৪৪ মিলিয়ন ডলার। তার উপর টুইটারের এই ডিলটা করতে মাক্সকের ১৩ বিলিয়ন ডলারের ব্যাংক ঋণের প্রয়োজন হয়, সাথে নিজের টাকা তো লেগেছেই। আর এখন তো টুইটারের ইন্টারেস্ট পেমেন্টই ১ বিলিয়ন ডলার হয়ে গেছে, মানে বছরের ১ বিলিয়ন ডলার।
তো এই সব কিছু কাভার আপ করার জন্যই টুইটারের এখন প্রয়োজন টাকার।তাই এত ক্রোধ এত ডেস্পারেশন মাক্সএর। আরেহ ভাই কি দরকার ছিল টুইটার ঝামেলায় পরার?টেসলা তো ভালোই চলছিলো।
তো আজকে ভাই এইটুকুই ছোট একটি আলোচনা ছিল। দেখা যাক মাক্স ভাই ভবিষ্যতে কি করেন। টুইটার কি আদৌও বাচাতে পারবে নাকি মাক্সকও ডুবে যাবে। তবে এইটুকু ক্লিয়ার যে মাক্স-এর ইমেজ একটু হলেও হার্ট হয়েছে। আর হ্যা আমি মোটেও মাক্স পন্থী বা ফ্যান না। আমিও চাই মাক্সএর স্পেসশিপে করে মার্স ঘুরে আসতে (যদি সুযোগ হয় আরকি)।
0 Comment "ফ্রি স্পিচ বাচাতে গিয়ে নিজেই বিপদে ইলোন মাক্সক। ৪৪ বিলিয়নের রুপকথা"
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন