Computer Education...know the computer history

আমরা আমাদের কাজ আদায় করার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করছি। যেমন লেখালেখির জন্য কলম, যাতায়াতের জন্য যানবাহন, সময় জানতে ঘড়ি। যন্ত্রকে দিয়ে কাজ আদায় করানোর লক্ষ্যে মানুষ অসংখ্য যন্ত্র তৈরী করেছে। কিন্তু কোন যন্ত্রই মানুষের সাধ এমনভাবে মেটাতে পারেনি, যেমনটা পেরেছে কম্পিউটার।
কম্পিউটার হলো এমন একটি যন্ত্র যা পৃথিবীর ধারা একেবারেই পাল্টে দিয়েছে। এ যন্ত্রটি কে আমরা আজ যেভাবে চিনি, এটি আসলে একেবারেই এমন ছিলো না। কাহিনী টা শুরু হয় প্রায় ২০,০০০ বছর আগে।



 ঈশাংগো বৌন, এ দন্ড টি সবচেয়ে প্রাচীন গণনাকারী যন্ত্র যা আমাদের পূর্বপুরুষেরা ব্যবহার করতো। যিশুর জন্মের প্রায় ২৪০০ বছর আগে ব্যাবিলনে গণনা করার জন্য ব্যাবহৃত হতো মানুষের তৈরী প্রথম গণনাকারী যন্ত্র, অ্যাবাকাস।
অ্যান্টিকিথিয়েরা হলো মানুষের তৈরী প্রথম অ্যানালগ কম্পিউটার। তারপর আসে মুসলিম বিজ্ঞানী আল বিরুনীর তৈরী করা অ্যানালগ কম্পিউটার অ্যাস্ট্রোল্যাব, যার ভূমিকা জৌতির্বিজ্ঞানে ব্যাপক।
আজকে আমরা যে কম্পিউটার দেখতে পাচ্ছি তার ভিত্তি স্থাপন করেন জার্মান গনিতবিদ গটফ্রিড লিবনিজ। তিনি ১৬৭৯ সালে দুই ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি তথা বাইনারি পদ্ধতির ধারণা দেন, যার উপর ভিত্তি করে আজকের সকল কম্পিউটার গঠিত।
১৮৮৬ সালে তৈরী হয় প্রথম কিবোর্ড। উনিশ শতকের প্রথম দিকে ইংরেজ গণিতবিদ চার্লস ব্যাবেজ সাধারণ কাজে ব্যবহার উপযোগী প্রোগ্রাম্যাবল কম্পিউটারের ধারণা দেন।
১৯৪১ সালে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম ইলেকট্রো মেকানিক্যাল প্রোগ্রাম্যাবল, সম্পূর্ণ অটোম্যাটিক ডিজিটাল কম্পিউটার জিথ্রি তৈরী করে জার্মানি।
১৯৪২ সালে আমেরিকা তৈরী করে প্রথম ইলেক্ট্রনিক ডিজিটাল কম্পিউটার এবিসি। ৩০ টন ওজন বিশিষ্ট এনিয়াক হলো আমেরিকার তৈরী করা প্রথম প্রোগ্রাম্যাবল ইলেক্ট্রনিক কম্পিউটার। এতে ব্যাবহৃত হয়েছিলো ১৮০০০ ভ্যাকিউয়াম টিউব।
১৯৫৮ সালে আইসি আবিষ্কৃত হয়। এর ফলে ১৯৭১ সালে ইন্টেল তৈরি করে মাইক্রো প্রসেসর। মাইক্রো প্রসেসর আবিষ্কারের ফলে কম্পিউটার দুনিয়ায় এক বিশাল পরিবর্তন আসে। কম্পিউটারের আকৃতি বিশাল থেকে অতি ক্ষুদ্রে পরিণত হয় এবং এটি সাধারণের ক্রয় ক্ষমতায় চলে আসে।
আজকে আমরা যে পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবহার করছি তার রূপরেখা প্রণয়ন করে আমেরিকান প্রতিষ্ঠান জিরক্স পার্ক। জিরক্স পার্ক ১৯৭৩ সালে জিরক্স আল্টো নামে একটি ডেস্কটপ বানায়, যাতে থাকে মাউস ও গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেইস ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম। এই মাউস ১৯৬৪ সালে তৈরি করে এসআরআই ইন্টারন্যাশনাল।
অ্যাপল কম্পিউটার ১৯৭৬ সালে আনে অ্যাপল ওয়ান এবং ৭৭ এ অ্যাপল টু। অপরদিকে ১৯৮০ সালে মাইক্রোসফট তৈরী করে ডস অপারেটিং সিস্টেম। আইবিএম অ্যাপল টু এর সাথে পালা দিতে ১৯৮১ সালে বাজারে ছাড়ে আইবিএম পিসি, যাতে থাকে ডস অপারেটিং সিস্টেম। ৭৬ এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ন আবিস্কার হলো ল্যাপটপ যা তৈরী করে জিরক্স পার্ক।
পরবর্তিতে অ্যাপল ১৯৮৩ সালে আনে লিসা এবং ৮৪ তে ম্যাকিনটশ। যাতে থাকে গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেইস ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম।  এই দুটো কম্পিউটারেই ব্যাবহৃত হয় মোটোরোলা প্রসেসর। ১৯৮৫ সালে আটারি তৈরি করে প্রথম রঙ্গিন গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেইস সমৃদ্ধ কম্পিউটার আটারি এসটি। কমপ্যাক তৈরী করে প্রথম আইবিএম কম্প্যাটিবল পার্সোনাল কম্পিউটার। তারপর অন্যরাও থেমে থাকেনি।
১৯৯০ থেকে ২০০০, এ সময়টায় মূলত দুই ধরণের কম্পিউটার পুরো বাজার দখল করে রাখে। মাইক্রোসফট ও ইন্টেল ভিত্তিক আইবিএম কম্প্যাটিবল কম্পিউটার। এবং মোটোরোলা ভিত্তিক অ্যাপল কম্পিউটার। আইবিএম কম্প্যাটিবল কম্পিউটারগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরী করে কিন্তু অ্যাপল নিজেই তাদের কম্পিউটার তৈরী করে।
৯৫ সালে উইন্ডোজ ৯৫ অপারেটিং সিস্টেম আসলে আইবিএম কম্প্যাটিবল কম্পিউটার একচেটিয়া রাজত্ব করে কম্পিউটার বাজার। ২০০২ সালে এইচপি কিনে নেয় কমপ্যাক, ফলে এইচপি হয়ে উঠে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পার্সোনাল কম্পিউটার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। ২০০৩ সালে  এএমডি নিয়ে আসে ৬৪ বিট প্রসেসর।
২০০৭ সালে আইফোন এসে কম্পিউটারকে পকেটে নিয়ে আসে। কম্পিউটারের সাথে বাংলা বর্ণের পরিচয় ঘটান যন্ত্র প্রকৌশলী সাইফ শহীদ।
অবশ্য এর মধ্যে অনেক নতুন কিছুই আসে, যেমন লিনাক্স, ইন্টারনেট, অ্যাডোবি, অটোডেস্ক, অ্যান্ড্রয়েড, গুগল, উইকিপিডিয়া এবং আরো অনেক নতুন প্রযুক্তি। ভবিষ্যতেও অনেক কিছুই আসবে যা কিনা আমরা এখন কল্পনাও করতে পারি না।

1 Response to "Computer Education...know the computer history"