শুধু ব্লু হোয়েল নয়, এরকম ভয়ংকর আরো কিছু গেম থেকে সাবধান!

আতঙ্কের নতুন নাম ব্লু হোয়েল। একাধিক টাস্ক। অবশেষে আত্মহত্যা। গোটা বিশ্বে ছড়িয়েছে বিভীষিকা। ছেলে-মেয়ের দিকে বিশেষ নজর রাখতে বলেছেন স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষ। সাইবার জগতের বিশেষজ্ঞরাও একাধিক পরামর্শ দিয়েছেন। রাশিয়া, অ্যামেরিকা ও ইউরোপের পর এশিয়ার ভারতেও হানা ব্লু হোয়েলের। শুধু ব্লু হোয়েল নয়, এই তালিকায় আছে আরও অনেক গেম। যা রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারে অভিভাবকদের। কী সেই সব গেম ও চ্যালেঞ্জ ? জেনে রাখুন, সাবধান থাকুন।



 
দা টাচ মাই বডি চ্যালেঞ্জ : বাংলায় এই খেলার নাম কানামাছি ভোঁ ভোঁ। শৈশবে প্রত্যেকেই কমবেশি খেলেছে। কিন্তু অনলাইনে অত্যন্ত বিপজ্জনক খেলাগুলোর মধ্যে একটি। চোখ বেঁধে একদল ছেলেমেয়ে এই খেলায় অংশ নেয়। সেই খেলার ভিডিও করে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে হবে। অধিকাংশ সময় ভিডিওতে দেখা গেছে, শরীরের গোপন অংশে হাত দিতে দেখা গেছে ওই চোখ বাঁধা পুরুষ বা নারীকে। শেষ দু’সপ্তাহে সোশাল মিডিয়া এই চ্যালেঞ্জ খেলেছেন অসংখ্য ব্যবহারকারী। এই ধরনের ভিডিও খুব তাড়াতাড়ি ছড়ায়। সামাজিক সম্মানও নষ্ট হয়।

ডিওডোরেন্ট চ্যালেঞ্জ : শরীরের চামড়া থেকে মাত্র কয়েক ইঞ্চি দূর থেকে ডিও স্প্রে করতে হবে। সেই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে হবে। কে কতক্ষণ বেশি করতে পারছে, সেটাই চ্যালেঞ্জ। শিশু বা নাবালকদের চামড়া পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ভবিষ্যতেও সেই দাগ থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

পাস আউট চ্যালেঞ্জ : WWE বা ইউটিউবের ভিডিও দেখে বাচ্চারা নিজেদের গলা টিপে ধরছে। যতক্ষণ পর্যন্ত শ্বাস রোধ না হয়, তা চলবে। সেই ভিডিও পোস্ট করে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করছে। পাস আউট চ্যালেঞ্জে মৃত্যু হয়েছে অনেক স্কুলশিশুর।

স্ন্যাপস্ট্রিক চ্যালেঞ্জ : স্ন্যাপচ্যাটে পরস্পরকে স্ন্যাপ করলে একটি পয়েন্ট পাওয়া যায়। একে বলা হয় স্ন্যাপস্ট্রিক। একদিন স্ন্যাপ না পাঠালেই সব স্কোর শূন্য। আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। এটাতেই গেমের আসল রহস্য। স্ন্যাপস্ট্রিক কাউন্ট ভালো না হলে সোশাল জগতে ভালো মর্যাদা পাওয়া যায় না। বন্ধুরা মনে করবে, আপনার শিশু ভালো বন্ধু নয়। এই থেকে হীনমন্যতায় ভোগা শুরু শিশু ও নাবালকদের। নেশায় বুঁদ হয়ে সারাদিন মোবাইলে সময় কাটাচ্ছে তারা। তাতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে আগামী প্রজন্ম।


সল্ট অ্যান্ড আইস চ্যালেঞ্জ
সল্ট অ্যান্ড আইস চ্যালেঞ্জ

সল্ট অ্যান্ড আইস চ্যালেঞ্জ : গত বছর সোশাল মিডিয়ায় এই গেমের মারাত্মক প্রভাব পড়ে। নাবালক-বালিকারা তাঁর শরীরের যে কোনও অংশে প্রথমে নুন রাখে। তারপর ঠান্ডা বরফের কিউব রাখে সেখানে। ফল হয় মারাত্মক। জ্বলে যায় শরীরের সেই অংশ। এই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে হয়। 




এর থেকে বাঁচতে কি করা যায়?
১। প্রথমত চাই আপনার সচেতনতা। কেন আপনি অপরের নির্দেশনায় যাকে আপনি কখনও দেখেন নি, যার পরিচয় জানেন না তার কথায় কেন নিজের জীবন অকালে বিলিয়ে দিবেন! 
২। এই রকম কোন লিংক আসলে তাকে এড়িয়ে চলা। সমাজের তরুন ছেলে-মেয়ে থেকে শুরু করে সব বয়সীদের মাঝে এই গেমের আদ্যোপান্ত সম্পর্কে বলা।
৩। আপনার সন্তানকে মোবাইলে ও কম্পিউটারে অধিক সময়ে একাকী বসে থাকতে দেখতে সে কি করছে তার খোঁজ খবর নেয়া। সন্তানকে কখনও একাকি বেশি সময় থাকতে না দেয়া এবং এই সব গেমের কুফল সম্পর্কে বলা। 
৪। সন্তানদের মাঝে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার মানসিকতা সৃষ্টি করা। যাতে করে তারা বুঝতে পারে আত্মহত্যা করা বা নিজের শরীরকে ক্ষতবিক্ষত করা অনেক বড় পাপের কাজ। 
৫। আপনার সন্তান ও পরিবারের অন্য কোন সদস্য মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কি না সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা। কেউ যদি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয় তাকে সঙ্গ দেয়া।
৬। আমাদের সকলেরই ফেসবুক আইডি আছে, যাতে কিছু না কিছু অন্য দেশের অচেনা বন্ধুরাও আছে। এদের সকলের থেকে সাবধান। হতে পারে, এদের মাঝেই লুকিয়ে আছে এসকল ভয়ংকর কিছু গেমের মডারেটররা।

0 Comment " শুধু ব্লু হোয়েল নয়, এরকম ভয়ংকর আরো কিছু গেম থেকে সাবধান! "

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন